মহেশখালী প্রতিনিধি:
দীর্ঘ এক বছর পূর্ণ হল মহেশখালীতে আত্মসমর্পণকৃত দস্যুদের। অভিযোগ উঠেছে যারা আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে তাদেরকে মধ্যস্থকারীর পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল নিজ এলাকায় অবস্থান করে পূর্ণবাসন করতে সহযোগিতা করা হবে সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি এখনো ও বাস্তবায়ন হয়নি। অপরদিকে এক বছর পূর্ণ হলেও আত্মসমর্পকৃত পরিবারের সদস্যসহ কারাগার থেকে জামিনে আসা দস্যুদের অনেকে নিজ ঘরে ফিরতে না পেরে মানবতার জীবন যাপন করছেন। এতে মাথা ব্যাথা নাই কারও। আজ কাল নিজ ঘরে ফিরতে পারবে বলে তাদেরকে মধ্যস্থকারীর পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে কালক্ষেপন করছেন বলে অভিযোগ অনেকের।
মানবতার জীবন যাপন করা আত্মসমর্পণকৃত জিয়া রহমানের বড় ভাই মিজানুর রহমান তার ফেসবুক টাইমলাইনে এক আবেকঘনময় স্টাটাস দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন হুবহু তুলা ধরা হল…
প্রিয় জিয়া মাতব্বরের কারা বরণ আজ সোমবার এক বছর পূর্ণ হল। শান্তির বার্তা পোঁছে যাক প্রিয় কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়ার প্রতিটি ঘরে ঘরে। শান্তি ও সহাবস্থান সৃষ্টির লক্ষে হাজার হাজার নারী পুরুষের দোয়া ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় আই জি পির মহোদয় ও আলোচিত সাংবাদিক এম এম আকরাম হোসাইনের সমন্বয়ের উপস্থিতিতে আত্মসমর্পণ করেন আজও নিজ এলাকায় সহাবস্থান ও শান্তি দুরের কথা এলাকায় যায়তেও পারি না বা আজও শান্তি ফিরে আসেনি তাহলে কি আত্মাসমর্পণ কৃত পরিবারের গুলোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছিল? অতিথে হাজারও ষড়যন্ত্রের পথ রুদ্ধ করে এগিয়েছি সত্যের পথ ধরে সামনে যত ষড়যন্ত্র আসুক এগিয়ে যাব বীর দর্পে আমাদের হারানো বাড়ীতে ফেরা কেউ রুখতে পারবে না অনেক ছাড় দিয়েছি কিন্তু আর নয় যত বাঁধাই আসুক ফেইস করার জন্য প্রস্তুত আছি আত্মসমর্পণের আজ এক বছর হয়ে গেল নিজ মাতৃভূমিতে ফিরতে পারিনি প্রতিশ্রুতি বদ্ধকারী ও সেই দিনের আয়োজকদের ব্যার্থতার কারণে।
ব্যর্থতা এই জন্য বলছি আত্মসমর্পণের এক বছরও কিছু করতে পারে নাই,, ঐ দিনই সফলতার স্বীকৃতী দিব যেই দিন সহাবস্থান সৃষ্টি হবে না হয় ভেবে নিব সব কিছু মরিচিকার পিছনে ছুটছি অচেনা পথ ধরে এর পরও হাজারও আশায় বুক বাধী কখন জম্মভূমিতে ফিরব আবার হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনব সবার সহ-অবস্তানের স্বপ্ন দেখি বার বার কিন্তু সেই স্বপ্ন ধরা দে না বার বার ভেংগে যায় কাঁচের মত। এই এলাকার বর্তমান সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান তারা সম্পর্কে জেঠা ভাতিজা দুজনেই যদি সহনশীল হয় এলাকায় সহাবস্থান ও শান্তি ফিরে আসা কোন ব্যাপার নয় আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি আমরা এখন সম্পৃর্ণ সহনশীল এবং শান্তিপূর্ণ একটাই লক্ষ উদ্দেশ্য শুধু প্রিয় মাতৃভূমিতে ফেরা এবং শান্তি ও সহাবস্থানের জন্যই তো এই আত্মাসমর্পণ যদি শান্তি নাই ফিরে আসে তাহলে এই আত্মসমর্পণের আর দরকার কি?
আমরা আর চাই না সংঘাত হানাহানি ও অতিথে যা হয়েছে সেই গুলির ইতি টানতে এলাকায় ফিরে সবাই মিলে মিশে ঐক্যবদ্ধ ভাবে থাকতে। আমার প্রতিপক্ষের অতিথের সব কিছু আমরা ক্ষমা করে দিয়ে এলাকায় ফিরতে চাই সম্মানিত প্রসাশনের সিনিয়র কর্মকর্তা ও প্রিয় সাংবাদিক বৃন্দ ও প্রিয় এলাকাবাসী সবার সহযোগিতা কামনা করছি সবার প্রতি শুভকামনা ও ভালোবাসা আজীবন আল্লাহ ভরসা জিয়ার প্রতি রইল শুভকামনা ও ভালোবাসা আজীবন
মহান আল্লাহ পাকের কাছে দোয়া করি যেন সুস্থ সুন্দর ও দীর্ঘ হায়াত দান করেন।
তুই ভাল থাকিস সব সময় তোর প্রতি সবার দোয়া ও ভালোবাসা ছিল আছে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য, গত ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর কক্সবাজারের মহেশখালীতে প্রথম আলোচিত সাংবাদিক আকরাম হোসেনের মধ্যস্ততায় র্যাব-৭ এর সহায়তায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও র্যাবের ডিজির উপস্থিতিতে মহেশখালীর আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ৫ টি বাহিনীর ৩৭ জনসহ ৪৩ জলদস্যু অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিল। এর ধারাবাহিকতায় ২য় দফায় ২০১৯ সালে ২২ নভেম্বর স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আশায় একযোগে মহেশখালীর কালারমারছড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজিপির উপস্থিতিতে আত্মসমর্পণ করেন ১২টি সন্ত্রাসী বাহিনীর ৯৬ জন জলদস্যু ও অস্ত্রের কারিগর। এ সময় তাঁরা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১৫৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, ২৮৪ রাউন্ড গুলি, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ বিভিন্ন যন্ত্র জমা দেন। তাঁরা সবাই জেলার মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া, পেকুয়ার জলদস্যু ও অস্ত্রের কারিগর।