নিজস্ব প্রতিবেদক:
মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের গাড়ী ডাকাতির ঘটনার বন্দুকযুদ্ধে নিহত মাতারবাড়ীর অতীতের কুখ্যাত সন্ত্রাসী হেলালের উক্ত ডাকাতির হুকুমদাতা আহাসান উল্লাহ ফাহাদ ব্যবসার নামে স্থানীয় আব্দুল আজিজ নয়ন থেকে ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে লাপাত্তা।
বাংলাদেশ সরকারের সবচেয়ে বৃহৎ প্রকল্প গুলোর মধ্যে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়নের তাপ ভিত্তিক কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র একটি। অর্ধযুগ ধরে মাতারবাড়ী- ধলঘাটা দুই ইউনিয়নের ১৪০০ একর জমির উপর ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ চলমান। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি এবং দেশি-বিদেশি জনবলের সংমিশ্রণে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে প্রকল্পের কাজ।
স্থানীয় বিত্তবানরাও প্রকল্পের (হোন্দাই, পেন্টা, সুমিতমো, পসকো ইত্যাদি) কোম্পানির কাছ থেকে সাব-কন্ট্রাক্টে বিভিন্ন কাজ করে থাকে। তেমনি স্থানীয় ৭ নং ওয়ার্ড মাতারবাড়ী পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশের আয়ুব খাঁ প্রকাশ (আইয়্যাকা) ছেলে আহসান উল্লাহ ফাহাদ ও প্রকল্পের সাপ্লায়ার হিসাবে সাব-কন্ট্রাক্টার ছিলেন। কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের পসকো কোম্পানির বিশেষ সাইটের টাউনশীপে তার সাথে কাজ করতেন ফাহাদ। টাউনশীপের কাজ মাঝপথে টাকা অভাবে সাইটের কাজ সম্পুর্ণ করতে অর্থসংকটের সম্মুখীন হন এবং তাত্ক্ষণিক একজন ইনভেস্টর প্রয়োজন হয় তাতে ফরহাদের পরিচিত স্থানীয় ৬ নং ওয়ার্ডের পরিচিত সিমেন্ট ব্যবসায়ী হাজী লেদু সওদাগরের ছেলে আব্দুল আজিজ নয়ন ০১/০৮ /২০১৯ ইং তারিখে শেয়ারকারী হিসাবে টাকা ইনভেস্ট করেন।
একজন ইনভেস্টর হিসাবে, ফাহাদ কোনধরনের চুক্তিপত্র নয়নকে প্রদান না করে একমাসে টাউনশীপের সংকট কাটিয়ে কাজ করে শেষ করে ফাহাদ, কোনদরনের লাভ প্রদান নাকরে নয়নের অনুমতি বিহীন অন্য ব্যবসা শুরু করার পর থেকে উভয় শেয়ারকারীর মাঝে ঝামেলা শুরু হয়। নয়নকে অবগত না করে নতুন ব্যবসা শুরু করার ফলে ফাহাদের কাছ থেকে নয়ন বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য ইনভেস্টের টাকা ফেরত দিতে বললে, ফাহাদ টাকা ফেরত দেওয়া প্রতিশ্রুটি দিলেও নয়নের ইনভেস্ট করা ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায় কয়েক মাসের জন্য।
অতঃপর পলাতক ফাহাদ মাতারবাড়ী আসলে, নয়নের আত্মীয় স্বজনরা তাঁকে আটক করলে ফাহাদের শ্বশুর পুরান বাজারের তজু সওদাগর বিচারের পরিবেশ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়ে জামাইকে নিয়ে যায়। মাতারবাড়ী আদর্শ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদ্বয়কে নিয়ে বিচারক পরিবেশে যাবতীয় হিসাব নিকাশ সম্পূর্ণ হয়। বিচারককে ৩১ শে ডিসেম্বরের মধ্যে টাকা দেওয়া প্রতিশ্রুতি দিলেও পরবর্তীতে পূণরায় পলাতক হয়ে যায়। কিছুদিন পর ফাহাদ কে ভোরে আটক করলে ডাকাত হেলাল বাহিনীর অন্যতম ডাকাত, ফাহাদের পালিত গোন্ডা আহমদ উল্লাহ নয়নের পিতা লেদু সওদাগরের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে আঘাত করে ফাহাদকে পালাতে সুযোগ করে দেয়।
কিছুদিন পর ফাহাদের পিতা আয়ুব খাঁ মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এনামুল হক চৌধুরী রুহুলকে আরেকটি বিচারের পরিবেশ তৈরি করতে বলেন। সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল, বিচারিক পরিবেশ করলে ফাহাদ সহ সংশ্লিষ্ট সকলে বিচারে উপস্থিত হয়। চেয়ারম্যান রুহুল পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে করে দেওয়া হিসাব নিকাশের ভিত্তিতে যাচাই-বাছাই করে সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে বিচার করে দেয় এবং ফাহদকে ৪ দিন সময় দিয়ে উভয় পক্ষের স্টাম্প নেয়।
দেওয়া ৪ দিন সময়ের ভিতরে পূনরায় পলাতক হয়ে যায় আহাসান উল্লাহ ফাহাদ, এছাড়া মাতারবাড়ী সহ মাতারবাড়ীর বাইরের বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা নেওয়া অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।