নিজস্ব প্রতিবেদক:
মহেশখালী উপজেলার দুই ইউনিয়নকে ঘিরে গড়ে উঠতেছে বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প। যেমন – কয়লাবিদ্যুৎ, গভীর সমুদ্র বন্দর, অর্থনৈতিক জোন, এলএনজি টার্মিনাল সহ নানান উন্নয়ন প্রকল্প। এ অঞ্চলে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প স্থাপন হওয়ার কারণে, দক্ষিণ এশিয়ায় সম্ভবনাময় একটি এলাকা হিসাবে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে মহেশখালীর সর্ব উত্তরের মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা ইউনিয়ন।
মহেশখালীর সর্ব উত্তরের এই দুই ইউনিয়ন (মাতারবাড়ী – ধলঘাটা) কে উপজেলার প্রধান ভূখন্ডের সাথে সংযুক্ত করেছে, চালিয়াতলি – মাতারবাড়ী দীর্ঘ ৫ কিলোমিটারের একমাত্র প্রধান সড়কটি। এছাড়া মাতারবাড়ী রাজঘাট থেকে ধলঘাট ইউনিয়নের নাছির মোহাম্মদ ডেইল পর্যন্ত, মাতারবাড়ী ইউনিয়নের অভ্যন্তরে ৮ কিলোমিটার। ও নাছির মোহাম্মদ ডেইল হতে ধলঘাটা ইউনিয়নের সাপমারার ডেইল পর্যন্ত, ধলঘাটা ইউনিয়নের অভ্যন্তরে ৭ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে।
এই দুই ইউনিয়নের সর্বমোট ২০ কিলোমিটার প্রধান সড়কের বেহালের অবস্থার কারণে, উভয় ইউনিয়নের প্রায় ১ লাখ মানুষের জনজীবন বিপর্যস্থ ও দুর্বিষহ হয়ে ওঠেছে। অরক্ষিত যোগাযোগ ব্যবস্থার ফলে এই ইউনিয়ন দুটি উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের থেকে পিছিয়ে পড়েছে বলে জানায় এলাকাবাসী।
মাতারবাড়ী – চালিয়াতলি সড়কটি অকেজো হওয়ার কারণ হিসাবে এলাকাবাসী চিহ্নিত করছেন, মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের মালামাল নিয়ে ধারণক্ষমতার অধিক গাড়ী চলাচল। যদিও টেকসই ভাবে এই সড়কটি নির্মাণ করতে জাইকার অর্থায়নে কাজ চলছে খুব ধীর গতিতে। সড়কটির কালভার্ট ও ছোট ব্রীজ গুলো খুলে ফেলার কারণে, সাময়িক চলাচলের জন্য যে কানেক্টিভ রাস্তা তৈরি করছে তাও খানাখন্দে ভরা। কার্পেটিং আছে এমন রাস্তার দু’পাশ ক্ষয়ে গেছে এবং ইটের সলিংয়ের রাস্তার মাঝখানে তৈরি হয়েছে বিশাল গর্ত। যারকারণে ঘন্টার পর ঘন্টার জন্য তৈরি হয় যানজট, নিয়মিত লেগেই আছে সড়ক দূর্ঘটনা।
এব্যাপারে মাতারবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আবু হায়দার বলেন, বর্তমানে রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে৷ রাস্তার পাইলিংয়ের কাজ শেষ এবং কালভার্টের কাজ চলতেছে৷ নির্দিষ্ট কার্যদিবসের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। তিনি আরো জানান, রাজঘাট থেকে সাইরার ডেইল পর্যন্ত প্রধান সড়কের কাজের জন্য জাইকা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। অনুমোদন হলে স্থায়ীভাবে সড়কটির কাজ হবে। এরমধ্যে আমি সড়কটি চলাচল উপযোগী করতে নিজে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন পাঠিয়েছি।
মাতারবাড়ীর অভ্যন্তরীণ প্রধান সড়কের নাজুক অবস্থার ফলে যাত্রীবাহী যানচলাচলেও দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চালক ও যাত্রীদের। মাস কয়েক পূর্বে মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুমিতমো করপোরেশনের অর্থায়নে সাময়িক সংস্কার কাজ চললেও তা ঠেকেনি ৩ মাসও।
এছাড়াও ধালঘাটা ইউনিয়নের স্থানীয় ১নং ওয়ার্ড নাছির মোহাম্মদ ডেইল থেকে সুতরিয়া বাজার পর্যন্ত দীর্ঘ ৫ কিলোমিটার সড়ক নিয়েও বেশ দূরাবস্থায় রয়েছে ইউনিয়ন বাসী। ইউনিয়নটির একমাত্র প্রধান সড়ক কাদামাটিতে পরিপূর্ণ হওয়ায়, যান চলাচল ছাড়াও হাঁটার মতো অবস্থা নেই বলে জানায় স্থানীয়রা। ফলে নিয়মিত রোগী নিয়ে যাতায়াত, খাদ্যশস্য পরিবহন ও জরুরি প্রয়োজনে স্থানীয়দের চলাচলে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সুতরিয়া থেকে ইউনিয়নটির সাপমারার ডেইল পর্যন্ত ৩ কিলোমিটারের সড়কটির উভয় পাশে গাইড ওয়াল, ও ইটের সলিং দ্বারা পূণরায় তৈরি করেছে বলে জানায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসান।
তিনি আরো জানান, নাছির মোহাম্মদ ডেইল থেকে সুতরিয়া পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়কটির জন্য বরাদ্দ হয়েছে। ভাঙ্গা ও কাদামাটির এই সড়কটির কাজ আগামী শুষ্ক মৌসুমে শুরু করবে বলে জানায় প্রতিবেদককে।
মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ কুমার দে জানান, মাতারবাড়ী টু চালিয়াতলি সড়কটিতে তিনটি প্যাকেজে কাজ চলবে৷ বর্তমানে কালভার্টের কাজ চলমান রয়েছে৷ মাঝখানে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়াতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ একটু ধীরগতিতে করে৷ বর্তমানে কাজ চলমান রয়েছে। ধলঘাটা ইউনিয়নের প্রধান সড়কটি জন্য আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বরাদ্দ হলে শুষ্ক মৌসুমে শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।