এ.কে রিফাত: (মহেশখালী)
মহেশখালীর চাঞ্চল্যকর খাইরুল আমিন হত্যা মামলার এজহারভুক্ত পাঁচজন আসামীকে কারাগারে প্রেরন করেছেন। যার মধ্যে রয়েছেন, মহেশখালী পৌর সাবেক মেয়র সরওয়ার আজম, তার ভাই উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান মৌলভী জহির উদ্দীন ও নাসির উদ্দিন প্রকাশ নাগু,গোরকঘাটা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শামছুল আলম ও ইব্রাহিমকে কারাগারে পাঠিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।
দীর্ঘ ৩২ বছর পর ১০ নভেম্বর ২২ ইং; (বৃহষ্পতিবার) বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে প্রেরনকৃত আসামীদের মধ্যে সাবেক পৌর মেয়র সরওয়ার আজম ০৫ নং আসামী, উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান মুহাম্মদ জহির উদ্দিন ০৬ নং আসামী, সাবেক চেয়ারম্যান শামছুল আলম ০২ নং আসামী, নাসির উদ্দিন নাগু ০৩ নং আসামী এবং ইব্রাহিম ২৫ নং এজহার নামীয় আসামী।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এ রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) সুলতানুল আলম চৌধুরী জানান, আজ বৃহস্পতিবার মামলাটির সর্বশেষ যুক্তিতর্কের দিন ছিলো। যুক্তিতর্ক শেষে আগামী ২৪ নভেম্বর মহেশখালীর চাঞ্চল্যকর খায়রুল আমিন হত্যা মামলার রায়ের দিন ধার্য্য করেছেন আদালত। মামলার শীর্ষ পাঁচ আসামীর জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯০ সালের ৯ এপ্রিল বিকেল আনুমানিক পাঁচটার দিকে মহেশখালী পৌরসভার গোরকঘাটা বাজারে দুর্বৃত্তের গুলিতে খুন হন তৎকালীন জেলা পরিষদ সদস্য ও তরুণ রাজনীতিবিদ খাইরুল আমিন সিকদার (২৮)। তিনি গোরকঘাটার মৃত হামজা মিয়া সিকদারের ছেলে। ওই দিন নিহত খাইরুল আমিনের বড় ভাই মাহমুদুল করিম বাদী হয়ে মহেশখালী থানায় মহেশখালীর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুর বক্স, সাবেক গোরকঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান শামশুল আলম, সাবেক পৌর মেয়র সরওয়ার আজম, তার ভাই উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান মৌলভী জহির উদ্দীন, হামিদুল হক, নাসির উদ্দিন ও সাবেক চেয়ারম্যান শামছুল আলমসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঘটনার তদন্ত করে এজাহারভুক্ত ২৫ জনসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন ওই বছরের ২২ নভেম্বর।
মামলার অপরাপর আসামীরা হলেন,
১। নূর বক্স পিতা – মৃত এলাহাদাদ , সাং- মাতারবাড়ী , ২। শামশুল পিতা- হাজী আবুল হোসেন , সাং- পুটিবিলা , ৩। নাসির উদ্দিন , পিতা মোজাহার মিয়া , ৪। হামিদুল হক পিতা- ঐ .৫ । সরোয়ার , পিতা ঐ .৬ । জহির উদ্দিন পিতা- ঐ , ৭ । আজিজ প্রকাশঃ আইজ্যা পিতা ঐ ৮ । সাব্বির আহমেদ পিতা হাজী আবুল হোসেন , ৯। মকবুল আহমেদ পিতা হাজী সাহেব মিয়া , ১০। নুরু পিতা- মৃত সুলতান আহামদ প্রকাশ( কবিরের লাপোয়া), সর্বসাং- পুটিবিলা , ১১। আবু তালেব পিতা- সিদ্দিক আহমেদ , ১২ । আবুল কালাম প্রকাশ (কলম্যা) পিতা- মৃত আবুল করিম , ১৩। ফিরোজ খান পিতা-মীর আহম্মদ খলিফা , সর্বসাং গোরকঘাটা , ১৪। আজিজুল হক পিতা- হাজী মীর কাশেম সিকদার , সাং- কুতুবজোম , ১৫। রহিম সিকদার পিতা- হাজী আবুল হোসেন , সাং- পুটিবিলা , ১৬। সাধন প্রকাশ (সাধন্যা) পিতা – রমন্যা , সাং বারৈ পাড়া পুটিবিলা , ১৭। গোলাম মওলা পিতা – মৃত গনু মিয়া , সাং পুটিবিলা , ১৮। হোসন আহমেদ পিতা – মৃত আহমেদুল আলী প্রকাশ ( আহমেদ আলী ) , সাং- পুটিবিলা , ১৯। সিরাজ পিতা – মৃত কবির আহমেদ, ২০। আমির হোসেন পিতা- হাজী মোজাহার মিয়া , সাং পুটিবিলা , ২১। মুজিব মিয়া পিতা- হাজী ইমাম শরীফ , সাং গোরকঘাটা, ২২। আমজাদ হোসেন পিতা- মৃত লাল মিয়া , সাং গোরকঘাটা ,২৩।আব্দু শুক্কুর পিতা-মৃত সোলাইমান ডাক্তার সাং পুটিবিলা , ২৪। ওসমান সরোয়ার পিতা – মৃত হাজী মকবুল আহমেদ , সাং- পুটিবিলা , ২৫। ইব্রাহিম পিতা- সাং- পুটিবিলা , সর্বথানা মহেশখালী , জেলা- ককক্সবাজার।
সংশ্লিষ্ট ধারা সহ অপরাধ এবং লুষ্ঠিত দ্রব্যাদির সংক্ষিপ্ত বিবরণ ধারা; ১৪৭/১৪৮/১৪৯/৪৪৭/৩০২/৩৪/১০৯ দঃ বিঃ বেআইনী জনতাবদ্ধে মারাত্মক অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হইয়া পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে একই উদ্দেশ্য সাধন কল্পে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে খুন করার অপরাধ।
তাছাড়াও ২০০৩ সালের ২৭ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত। দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষ করে ৩২ বছর পর মহেশখালীর আলোচিত সর্বোচ্চ দীর্ঘমেয়াদী মামলার রায়ের দিন ধার্য্য করেছেন বিজ্ঞ আদালত।
উল্যেখ্য যে, মহেশখালীর আলোচিত খাইরুল আমিন হত্যাকাণ্ডের মামলাটির রায় নিয়ে বেশ রাজনীতি করা হয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল। যার কারন হিসেবে বার বার পেছানো হয়েছিল মামলাটির রায়ের ধার্য্য তারিখ। যদিওবা দীর্ঘ ৩২ বছর পর চলতি বছরের ২৪ নভেম্বর আলোচিত খাইরুল আমিন হত্যা মামলার রায়ের দিন ধার্য্য করেছেন বিজ্ঞ আদালত