রোববার (২৬ মে) রাতে তিনি সন্তান প্রসব করেন।
প্রসূতি রাশেদা বেগম সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের জামুডাঙ্গা বাঁধের মাথা এলাকার মো. বাদশা মিয়ার স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দিনমজুর বাদশা মিয়া, স্ত্রী ও তিন মেয়েকে নিয়ে মুন্সিগঞ্জের নিমতলা বাজার এলাকায় বাস করেন। কিন্তু লকডাউন পরিস্থিতির কারণে দুই মাস আগে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি আসেন বাদশা মিয়া।
এদিকে, ঘটনার পর পরই প্রসূতির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালের গেটে অবস্থান নেয়। এ সময় জড়িতদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন তারা। পরে খবর পেয়ে রাত ৯টার দিকে সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নবীনেওয়াজ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ শাহারিয়া খান বিপ্লব হাসপাতালে যান। এ সময় ঘটনা তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেন তারা।
প্রসূতির স্বজনদের অভিযোগ, সোমবার বিকেলে নিজ বাড়িতে প্রসব বেদনায় উঠলে হাসপাতালে নেয়া হয় রাশেদা বেগমকে। কিন্তু হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মিঠুন কুমার বর্মণ, সেবিকা বাসনা রানী ও অফিস সহায়ক শিল্পী রানী ভর্তি না করে তাদের অন্য হাসপাতালে যেতে বলেন। এ সময় করোনার ভয় দেখিয়ে তাদের তাড়িয়ে দেয়া হয়। নিরুপায় হয়ে হাসপাতালের প্রধান গেটে আসার পর পরই সন্তান প্রসব করে রাশেদা। এ সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অজ্ঞান হয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন তাকে হাসপাতালে নেয়। এমন ঘটনার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলাকেই দায়ী করেন স্বজনরা। ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি তাদের।
তবে অভিযোগের বিষয়ে প্রথমে কথা বলতে চাননি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মিঠুন কুমার বর্মণ। যদিও পরে তিনি প্রসূতি ওই নারীর নানা জটিলতার কথা বলে নিজের দায় এড়ানোর চেষ্টা করেন। এছাড়া অভিযুক্ত সেবিকা বাসনা ও অফিস সহায়ক শিল্পী রানী ঘটনার পর আত্মগোপনে থাকায় তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহীনুল ইসলাম বলেন, ওই প্রসূতি বয়স্ক হয়েও গর্ভে সন্তান ধারণ করায় প্রসবে নানা জটিলতা থাকায় তাকে সদর হাসপাতালে নেয়ার জন্য স্বজনদের পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু হাসপাতাল থেকে যাওয়ার পথে গেটে সন্তান প্রসব করেন তিনি। বর্তমানে নবজাতক ছেলে শিশুটি সুস্থ রয়েছে। তবে প্রসূতি মাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুর মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।