সম্পাদকীয়:
মহেশখালীর মানুষের ৫০ বছরের ঘাট পারাপারে নির্যাতন,বঞ্চনা,নিপীড়নের কথা অজানা নয় – মঈনুল হাসান পলাশ
মহেশখালীর মানুষ ৫০ বছর ধরে ঘাট পারাপারে নির্যাতন সইছে। তাদের পাশে কেউ নেই। এ যেনো মধ্যযুগীয় জমিদারী।
এই প্রথম দেখলাম মহেশখালীর মানুষ বিদ্রোহ করছে। এই বিদ্রোহ সফল হোক। ঘাট জমিদারির সাথে যুক্ত সকল পক্ষের মুখোশ উন্মোচন করুন।
কক্সবাজার-মহেশখালী চ্যানেলে যারা নিয়মিত যাতায়াত করেন,তারা জানেন উভয় ঘাটে, কি নির্মম অত্যাচার চলে এখানে! ছোট্টো একটা পোটলার জন্যও টাকা দিতে হয় কুতুবদিয়া- মাতারবাড়ী- ধলঘাট হতে আসা যাত্রী পরিবহনকারী বোটগুলো মহেশখালীর গোরকঘাটা ঘাটে ভিড়তে দেয়া হয় না। কোনো যাত্রী তুলতে দেয়া হয় না।
গোরকঘাটা ঘাটের জমিদারদের রয়েছে নিজস্ব কাঠের নৌকা। এসব নৌকার কোনো সময়সূচি নেই। মানুষ ভরা হলে যাত্রা শুরু করে। ১০০/১৫০ মানুষ গাদাগাদি করে ভরতে যতো সময় লাগে লাগুক। তারপর…. ঘন্টায় ১০ মাইল বেগে চলা এই বোট কক্সবাজারের ছয় নম্বর ঘাটে ভিড়তে লাগে এক ঘন্টার মতো। দ্রুত আসতে চাইলে আছে স্পীডবোট। এসব স্পিডবোটও সেই ঘাট জমিদারদের অধীনে। এগুলোর কোনো নিরাপত্তা নেই। নেই ফিটনেস।
আর আছে চরম দূর্ব্যবহার এবং গালিগালাজ। গোরকঘাটা আর শহরের ছয় নম্বর ঘাটের ইজারাদার এবং তাদের সাথের লোকজন অকল্পনীয় রকমের বেয়াদব এবং অসভ্য। তাদের অসভ্যতার প্রতিবাদ করলে সোজা গায়ে হাত তোলে। একই রকমের অসভ্য এবং বেয়াদব স্পিডবোটের চালক,কাঠের নৌকার চালক।
সারাদেশের মানুষ আধুনিক বাহনে চড়ার সুযোগ পেয়েছে। দ্রুতগামী-বিলাসবহুল যানবাহনে চলাচল করছে। কিন্তু মহেশখালীর মানুষের উপায় হলো ৫০ বছরের আগের প্রযুক্তির ভটভট করা ইঞ্জিন চালিত নৌকা।
মহেশখালীর মানুষের এই বঞ্চনা- নিপীড়নের কথা কারো অজানা নয়। জানে সরকারি প্রশাসন। জানে ঘাটের মালিক জেলা পরিষদ। জানেন এমপি এবং নেতারাও। এখানে বিএনপি- আওয়ামীলীগ- জামায়াত সব একাকার। কিন্তু বোধগম্য কারণে কিছুই বদলায় না মহেশখালীবাসী, এবার কি পারবেন বদলে দিতে? নিজেদের সব শক্তিকে একত্র করে???
✒মঈনুল হাসান পলাশ
সহযোগী অধ্যাপক (কক্সবাজার সিটি কলেজ)
সম্পাদক ও প্রকাশক (দৈনিক সমুদ্রকন্ঠ)