সম্পাদকীয়:
আমি কোন মহাপুরুষ নয় যে আত্বজীবনী লিখবো, যশস্বী বা কৃতি পুরুষের মত স্মৃতি কথা লিখার অধিকার আমার নেই, তবুও জীবন পথ চলতে চলতে অনেক কিছু দেখেছি, অনেক কিছু শিখেছি, আবার অনেক কিছু উপলদ্ধিও করেছি, ছোটবেলায় ষোলশহর রেল ষ্টেশনের আশেপাশে পেটমোটা কনস্টেবলকে দেখেই ঘাবড়ে যেতাম কৈশোর বেলা পেরিয়ে যৌবনে পা দিতে না দিতেই খবরেরকাগজে রিপোর্টার হলাম, আজ তারই পরিপ্রেক্ষিতে এই লেখার প্রয়াস, লিখবো নি-স্বার্থভাবে বিবেকের তাড়নায় রাষ্ট্রের স্বার্থে নিজেদের ক্ষয় করার গল্প।
সাংবাদিকতা পেশাকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ পেশা বলা হয়ে থাকে, আর সাংবাদিকদের সমাজের দর্পন বলা হয়, কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছেন আদৌ আমরা সেই চতুর্থ স্তম্ভের সরকার প্রদত্ত স্বীকৃতি পাওয়া যোগ্যতা রাখি কিনা? গনমাধ্যমকর্মীদের কার্যপনালী গুলো কি একবারও গভীরভাবে পর্যালোচনা করে দেখেছেন? দেখেননি, দেখার প্রয়োজনও করেন না কেউ।
কিন্তু একটু ভেবে দেখুন তো অগ্নিকাণ্ডের মত ভয়াবহ ঘটনা থেকে যখন সবাই নিজেকে সুরক্ষা করার জন্য ১০০ ফিট দুরে সরে যায় তখন সংবাদকর্মীরা দাউদাউ করে জ্বলা আগুনের দিকে নিজেকে ঠেলে দেই আর উত্তপ্ত আগুনের পাশে দাড়িয়ে লাইভ করে, বন্দুকযুদ্ধ, মারামারি হানাহানি, অথবা হরতালের মত ঘটনায় গুলাগুলি কিংবা বোমা হামলায় বিস্ফোরণের ভয়ে যখন সবাই নিজেকে সুরক্ষা করার জন্য নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেই তখন সংবাদকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই গুলাগুলি অথবা বোমা বিস্ফোরনের মাঝখানে দাড়িয়ে ফটোস্যুট কিংবা লাইভ করতে ব্যস্ত, রাষ্ট্রীয় ব্যক্তিবর্গের মৃত্যুর জানাযায় যখন সবাই সারিবদ্ধ হয়ে নামাজের প্রস্তুতি নেই তখন সংবাদকর্মীরা সেই দৃশ্য সবাইকে দেখানোর জন্য লাইভ করতে ব্যস্ত, কালবৈশাখী ঝড় কিংবা মোরা, ফনির মত ভয়াবহ ঘুর্নিঝড়ের সময় যখন ১২০ কি.মি বেগে ধমকা হওয়া ছুঁড়ে তখন এই ছ্যাঁচোড় সাংবাদিকরা রেকর্ড পরিমাম বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে বলে সর্বশেষ খবর জানাতে আমি এই মুহুর্তে দাড়িয়ে আছি মোংলা পায়রা বন্দরে, কিসের জন্য এতকিছু করা? কিসের বিনিময়ে উত্তপ্ত আগুনের পাশে দাড়িয়ে লাইভ কিংবা গুলাগুলি, মারামারি, হানাহানি, অথবা বোমা বিস্ফোরনের মাঝে গিয়ে ফটোস্যুট করা? কিছুই পায়না বললে পুরোটায় মিত্যে হবে, কারন আমরা গনমাধ্যমকর্মী বা সংবাদকর্মীরা সবকিছুর বিনিময়ে নির্যাতন, নিপীড়ন, লাঞ্চনা, বঞ্চনা কি কম পেয়ে থাকি? তাহলে অনর্থক মিত্যে বলবো কেন!
আমি একজন ক্ষুদ্র গনমাধ্যমকর্মী হয়ে খুবই বিস্মিত হয়, আমরা সংবাদকর্মীরা যখন নিজের জীবন বাজি রেখে উপরোল্লিখিত কার্যপনালীগুলো সম্পন্ন করি তার বিনিময় হিসেবে লাঞ্চনা বঞ্চনা, নির্যাতন, নিপীড়ন ছাড়া আর কি বা পায়? আজ বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম কিংবা বাংলাদেশ তৃনমূল সাংবাদিক কল্যান সোসাইটি অথবা অনলাইন প্রেস ইউনিটির মত সাংবাদিক সংগঠনগুলো ১৮ দপা যৌক্তিক দাবি নিয়ে আওয়াজ তুলতে তুলতে গলা ফাটিয়ে ফেলছে তবুও যে রাষ্ট্রের স্বার্থে এতকিছু করা সেই রাষ্ট্র ঘুমের ধ্যান করে আছে, যেন কিছুই শুনছেনা তারা।
জানিনা আজকের এই লেখাটি মাদার অফ হিউমিনিটি বিশ্ব মানবতাময়ী নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত পৌছাবে কিনা, যদি পৌছাই তাহলে প্রিয় নেত্রী আপনাকে বিশ্বের ২য় উন্নয়নশীল দেশের সালাম জানিয়ে বলতে চাই দয়াকরে আমাদের ১৮দপা যৌক্তিত দাবিগুলো মেনে নিয়ে দেশের চতুর্থ স্তম্ভ পেশা সাংবাদিকতাকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিন।
ফুয়াদ মোহাম্মদ সবুজ।
সাংগঠনিক সম্পাদক
অনলাইন প্রেস ইউনিটি চট্টগ্রাম মহানগর।