1. dwipnews24.info@gmail.com : Dwip News 24 :
  2. editor@dwipnews24.com : Newsroom :
বনবিভাগের যোগসাজশে মহেশখালীর সংরক্ষিত বন গিলে খাচ্ছে অবৈধ করাতকল | দ্বীপ নিউজ
May 17, 2024, 2:30 am
শিরোনাম :
গ্লোরিয়াস ওমেন এন্টারপ্রেনার অব বাংলাদেশ এর পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠিত, শাহরিন পরিচালক ও জেরিন সম্পাদক নির্বাচিত সাংবাদিক কায়ছারের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার; উপজেলা প্রেসক্লাবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ মাতারবাড়ীতে পূর্ব শত্রুতার জেরে রাতের আধাঁরে হামলা ও লুটপাট, আহত একাধিক মাতারবাড়িতে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, পরিবারের দাবী হত্যা মহাকাশ গবেষণায় মহেশখালীর ১১ শিশু-কিশোরের সফলতা মাতারবাড়ি প্রকল্পের ভিতরে সাংবাদিক রকিয়তকে আটকে রেখে মারধর ও হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন মাতারবাড়ীতে সাংবাদিকদের হাত-পা কেটে সাগরে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান রাজাকে বিভিন্ন মহলে অভিনন্দন কক্সবাজার জেলা থেকে বিভাগীয় পর্যায়ে জয়িতা সম্মাননা পেলেন শাহরিন জাহান মহেশখালীতে ভুমিহীন ও ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জীবন জীবিকার সুরক্ষার তাগিদে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

বনবিভাগের যোগসাজশে মহেশখালীর সংরক্ষিত বন গিলে খাচ্ছে অবৈধ করাতকল

  • আপডেটের সময় : রবিবার, অক্টোবর ২৩, ২০২২
  • 275 ভিউ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার একর সংরক্ষিত সবুজ বনাঞ্চল গিলে খাচ্ছে ৩১ টি অবৈধ করাতকল। বন আইন অনুযায়ী, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপনের কোনো সুযোগ বা নিয়ম নেই। তবে এসব আইনের তোয়াক্কা না করেই করাতকল বসিয়ে বনখেকোরা গিলে খাচ্ছে মহেশখালীর সংরক্ষিত বন।

বর্তমান সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প স্থাপনের জন্যে গণহারে গাছ কেটে উজাড় করা হচ্ছে বন। মহেশখালীর কালারমারছড়া ইউনিয়নে তেলের ডিপো ও পাইপ লাইন স্থাপনের জন্য সাবাড় করেছে প্রায় ২০০ একরের মতো সংরক্ষিত বন। যেখানে কাটা পড়েছে প্রায় ৩০ হাজারের মতো বিভিন্ন প্রজাতির গাছগাছালি। এছাড়াও দিনেশপুর বিটের অধীনে শাপলাপুর গোরকঘাটা সড়কের চিতারঝিরি ব্রিজের লাগোয়া এলাকায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর তৈরি করা হয়েছে রাস্তা। সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প ও গ্রামীণ অপরিকল্পিত অবকাঠামো তৈরিতে কাটা পড়া গাছ ছাড়াও, অবশিষ্ট শতবর্ষী সহ বিভিন্ন বয়সী নানান প্রজাতির গাছ গিলে খাচ্ছে মহেশখালীর এসব করাতকলগুলো।

বনবিভাগ হতে প্রাপ্ত তথ্যমতে মহেশখালী উপজেলায় মোট ৩১ টি করাতকল রয়েছে। এই ৩১ টি করাতকল গুলোর মধ্যে মধ্যে ছোট মহেশখালী মুদিরছড়া বিটের অধীনে রয়েছে ১৩ টি, হোয়ানক কেরুনতলী বিটের অধীনে ৩ টি, কালারমারছড়া বিটের অধীনে ১১ টি, শাপলাপুর বিটের অধীনে ২ টি ও মাতারবাড়ি বিটের অধীনে ২ টি করাতকল রয়েছে। যেগুলো মধ্যে ৪টি কলের লাইসেন্স থাকলেও, লাইসেন্স নবায়ন না করেই চলছে দেদারসে। মহেশখালী উপজেলা প্রশাসন ও বনবিভাগের নিরব ভূমিকার ফলে সরকারি আইন এবং নিয়মনীতি অমান্য করে অবৈধভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে মহেশখালীর এই ৩১ টি করাতকল।

মহেশখালীতে লাইসেন্সবিহীন এসব করাতকল কিভাবে চালায়? তা করাতকল মালিকদের কাছে জানতে চাইলে জানান, বনবিভাগের বন কর্মকর্তাদের মাসিক মাসোহারা দিয়েই এইসব করাতকল চালান তারা। শাপলাপুর বিটের অধীনে মোঃ আলী স’মিলের স্বত্বাধিকারী জানান, বনকর্মকর্তা রাজিব কে দিতে হয় দুই হাজার করে। এছাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তাদেরও দিতে হয় মাসোহারা। একই কথা জানান অন্য স’মিল গুলোর মালিকগণ। বিষয়টি নিয়ে বনকর্মকর্তা রাজিবের মোবাইলে একাধিকবার কল করেও, কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদীকে মহেশখালী উপজেলার মোট ৩১ টি অবৈধ করাতকল গুলোর মধ্যে ১৬ টির বিরুদ্ধে রয়েছে বনবিভাগের মামলা।
এসবের মধ্যে বড় মহেশখালীতে মোঃ খোরশেদের মালিকানাধীন বানিয়ার দোকানের খোরশেদ স’মিল ও মোঃ আবু তাহেরের মালিকানাধীন জাগিরাঘোনার তাহের স’মিল, আব্দুস সালামের মালিকানাধীন নতুন বাজারের সালাম স’মিল, নুরুল হক সওদাগরের মালিকানাধীন কালাইয়ার দোকান এলাকার নুরুল হক স’মিল ও কুতুবজুমের আবুল কাশেমের মালিকানাধীন কাশেম স’মিল, মাওলানা ফরিদের মালিকানাধীন বটতলীর ফরিদ স’মিল, জালাল হোসনের মালিকানাধীন পৌরসভার মদিনা স’মিল, সিরাজুল মোস্তফা বাঁশির মালিকানাধীন সিরাজুল মোস্তফা স’মিল, মোঃ শফির মালিকানাধীন হোয়ানকের শফি স’মিল, মোঃ এরফানের মালিকানাধীন কালারমারছড়ার আঁধারঘোনার লিয়াকত স’মিল, নোনাছড়ির সালাম স’মিল, মোঃ আলাউদ্দিনের মালিকানাধীন কালারমারছড়ার আলাউদ্দিন স’মিল, এবং ইউনুছখালীর মোসাদ্দেক স’মিল, নাছির স’মিল, শাপলাপুরের আলী স’মিল, মাতারবাড়ির আনছার স’মিলের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও এসব স’মিল চলছে দেদারসে। বনবিভাগ কিংবা প্রশাসন এইসব অবৈধ স’মিলের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

এই বিষয়ে বনবিভাগের মহেশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা খান জুলফিকার আলী মাসোহারা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, করাতকল গুলো থেকে মাসোহারা নেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। এছাড়া মহেশখালী রেঞ্জের অধীনে কোনো বন কর্মকর্তা সুবিধা নিয়ে থাকে, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো জানান, সংরক্ষিত বনের পাশে যেহেতু লোকালয়, মানুষজন তাঁদের খতিয়ানি জায়গায় করাতকল স্থাপন করে। বনবিভাগের রিজার্ভের জায়গায় কোন কল নেই। আর করাতকল স্থাপনের ক্ষেত্রে বনবিভাগের কোন অনুমতিও নেয়না। মহেশখালীর এসব করাতকলের বিরুদ্ধে বিগতমাসেও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সাথে নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে বনবিভাগ। লাইসেন্সবিহীন অবৈধ করাতকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি।

মহেশখালীতে গাছ কেটে – বন উজাড়ের পাশাপাশি পাহাড় কেটে বালি বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ করে, সবুজ আন্দোলন কক্সবাজার জেলা শাখার বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মুনির বিন সোলতান জানান, গাছ কেটে বন উজাড় করা এবং পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি একই সূত্রে গাঁথা৷ গাছ শূন্য পাহাড়, পরে পাহাড় শূন্য মহেশখালী করাই এই অসাধু চক্রের মূল লক্ষ্য। এ কারণেই দিন দিন মহেশখালীর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম একসময় জীবাণুমুক্ত অক্সিজেনের অভাবে ভুগবে। মহেশখালীকে বাচাঁতে পাহাড় থেকে অবৈধ গাছ কাটা বন্ধ করতে প্রথমে এই অবৈধ করাতকল গুলো বন্ধ করা জরুরি। প্রশাসনকে এ ব্যাপারে কঠোর হওয়া ও আইনের সঠিক প্রয়োগ করতে হবে৷

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মহেশখালী শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, মহেশখালীর এসব করাতকলের কোনো বৈধতা নেই। কিন্তু কিছু অসাধু বনকর্মকর্তা ও বনখেকোদের কারণে পরিবেশ ধ্বংসের পথে। মাসিক মাসোহারার নিয়ে বনবিভাগ সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব করাতকলের বিরুদ্ধে কিছু অদৃশ্য কারণে অভিযান চালায় না। করাতকলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা তো পরের বিষয়। সংরক্ষিত বনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কল স্থাপনের নিয়ম না থাকলেও, কিভাবে মহেশখালীতে পাহাড়ের কিনারা ঘেঁষে এসব করাতকল স্থাপন করতে দিলো বনবিভাগ? উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তা তদন্ত করে বের করা উচিত। সর্বশেষ বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র পক্ষ থেকে এইসব করাতকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবী জানান তিনি।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই বিভাগের আরো খবর
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত © 2022 dwipnews24.net
Desing & Developed BY ThemeNeed.com
error: Content is protected !!