নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী ঐক্যজোট। গত ২০ নভেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংবাদ সম্মেলনে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান দলটির নেতারা।
তারা বলেন, ইসলামী ঐক্যজোট নির্বাচনমুখী সংগঠন। তাই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে ইসলামী ঐক্যজোট নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশ নিয়েছে। কমিশন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বদ্ধপরিকর। তাই ইসলামী ঐক্যজোটের মজলিসের শূরা বিগত সময়ের মতো আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদীকে মহেশখালী – কুতুবদিয়া (কক্সবাজার-০২) আসন থেকে ইসলামী ঐক্যজোটের মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন, দলটির বর্তমান জেলা সভাপতি ও সাংবাদিক নেতা জে.এইচ.এম ইউনুস। তিনি আজ রবিবার (২৬শে নভেম্বর) ইসলামি ঐক্য জোটের ঢাকা মহানগর অফিসে, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মইনুদ্দীন রুহির হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাওলানা ইউনুস মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী মুন্সির ডেইল এলাকার কৃতি সন্তান। তিনি জেলাজুড়ে বিভিন্ন ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন। তিনি কক্সবাজারের উখিয়ায় খাদিজাতুল কুবরা বালিকা মাদ্রাসা, মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালীতে রিয়াজুস সালিহাত মহিলা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখেন। এছাড়া তিনি বর্তমানে মহেশখালী আয়েশা ছিদ্দিকা বালিকা মাদ্রাসার মোহাদ্দেস হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি মহেশখালী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন।
রাজনৈতিক জীবনে মাওলানা ইউনুসের পদচারণা হয়েছিল কয়েক যুগ আগে থেকেই। তিনি শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে অবদান রাখার পাশাপাশি রাজনৈতিক জীবনে রয়েছে ওনার ব্যাপক সাফল্য। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইসলামী ঐক্যজোটের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯০ সালের ২২ ডিসেম্বর থেকে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে ইসলামী ঐক্যজোট মিনার প্রতীকে নির্বাচন করে ১ টি আসন, ১৯৯৬ সালে ১টি আসন এবং ২০০১ সালে বিএনপির জোটে গিয়ে ৪টি আসন লাভ করেন। মাওলানা জে.এইচ.এম ইউনুস ২০১০ সাল থেকে দীর্ঘ ১ যুগ ধরে ইসলামী ঐক্যজোটের কক্সবাজার জেলার সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বিভিন্ন সভা, সমাবেশের মাধ্যমে তিনি রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন।
তাঁরই ধারাবাহিকতায় মাওলানা ইউনুস সুনামধন্য জাতীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং বর্তমানেও কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ২০২২ সালে মহেশখালী উপজেলা প্রেসক্লাব নির্বাচনে বিপুল ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হন। এবং সাংবাদিকতার পেশায় থেকে নানান সামাজিক আন্দোলনে জোরালো ভূমিকা রাখেন।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহেশখালী – কুতুবদিয়া (কক্সবাজার -২) মিনার প্রতীকে ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে সাংবাদিক নেতা মাওলানা জে.এইচ.এম ইউনুস বলেন – এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ইসলামী ঐক্যজোটের রাজনীতিতে সক্রিয় ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। সাংবাদিকতার মাধ্যমে কলম চালিয়ে যাচ্ছি, সমাজ সংস্কারে মানববন্ধন থেকে শুরু শিক্ষা বিস্তারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এই প্রতিকে ৯১ তে মরহুম মাওলানা আমজাদ আলী, ২০০৫ মাওলানা সুলাইমান মহেশখালী – কুতুবদিয়া হতে নির্বাচনে অংশ নেন।
এছাড়া তিনি আরো জানান, নিরীহ মানুষের পাশে দাড়াতে এবং জনকল্যাণমুখী কাজের জন্য নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়া তিনি নির্বাচনি ইশতিহারে মহেশখালী – কক্সবাজার সেতু, কুতুবদিয়ার চারপাশে টেকসই বেড়িবাঁধ, মহেশখালী – কুতুবদিয়ার দুই দ্বীপের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে স্থানীয়দের চাকরির বিষয়টি অগ্রাধিকার কথা জানান।
এদীকে ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ, সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়েছেন। এবং দেশের ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ইসলামী ঐক্য জোটের কর্মসূচি ঘোষণা ও ৩০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান ইসলামী ঐক্যজোট।
তফসিলের সময় পুনর্নিধারণের দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী এই স্বল্পসময়ের ভেতর প্রার্থীদের নির্বাচনী যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া বেশ কঠিন হবে। তাই ইসলামী ঐক্যজোট ঘোষিত তফসিল পুনর্বিন্যাস করার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাই।