আ ন ম হাসান:
দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে বন্ধ রয়েছে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্সরে সেবা। এতে করে এ জনপদের সাড়ে ৬ লাখ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। মহেশখালীর সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে রয়েছে একটি মাত্র সরকারী হাসপাতাল। অত্র দ্বীপাঞ্চলে যোগাযোগ ক্ষেত্রে অনুন্নত থাকায় এখানে গড়ে উঠেনি কোন বেসরকারী হাসপাতাল। যার কারণে সাধারণ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র আশ্রয়স্থল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। আর এরকম একটি জনগুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে অব্যবস্থাপনার অভাবে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে একমাত্র এক্সরে মেশিনটি। আর এটি ঠিক করতে কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙ্গেনি দীর্ঘ ১৬ বছরেও !
সরেজমিনে হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে ও রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে আউটডোরে সেবা নেয়া রোগীর সংখ্যা ৩/৪শ জন, ইনডোরে ভর্তি রোগী ৩০/৪০ জন এবং জরুরী বিভাগে সেবা নেয়া রোগীর সংখ্যা প্রায় ২শ জন। সব মিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৬/৭ শতাধিক রোগী স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসেন। তাদের মধ্যে অনেকের এক্সরে করানোর প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু হাসপাতালে নামে মাত্র এক্সরে কক্ষ থাকলেও তা কবে, কখন, কে খুলেছিল সেই বিষয়ে কেউ সঠিক তথ্য দিতে পারেনি।
এই বিষয়ে জানতে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ মাহফুজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যোগদানের পর থেকেই আমি এই হাসপাতালে আছি। এখন পদোন্নতি পেয়ে স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালণ করছি। আমার জানামতে দীর্ঘ ১৬/১৭ বছর যাবত হাসপাতালে এক্সরে সেবা বন্ধ রয়েছে। জনবলের অভাবে এক্সরে মেশিনটিও অচল হয়ে এখন নষ্ট। জনবল ও নতুন এক্সরে মেশিন চেয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে খোঁজ নিলে বেরিয়ে আসে কেন হাসপাতালের এক্সেরে চালু করার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের এ উদাসিনতা বা অপারগতার বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য ৷ হাসপাতালের আশেপাশে প্রায় বেসরকারী ভাবে ৩টি ডায়াগানস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। উক্ত সেন্টার গুলোতে হাসপাতালে চাকুরী করা ডাক্তার, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শেয়ার হোল্ডার হিসেবে থাকায় সরকারী ভাবে এক্সরে মেশিনটি চালুর জন্য দেড় যুগ ধরে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি এবং ভবিষ্যতেও চালুর ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখবে তাও প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকায়।
রোগীদের সাথে কথা বললে তারা জানিয়েছেন, সরকারী ভাবে এক্সরে সেবা বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে এক্সরে করাতে হয়। এতে করে প্রতিটা এক্সরে বাবদ গুণতে হয় প্রায় ৪/৫’শ টাকা। প্রতিদিন এ দ্বীপের শতাধিক রোগী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এক্সরে সহ নানান পরীক্ষা নীরিক্ষা বাহিরে করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাদের দাবী হাসপাতালে দ্রুত এক্সেরে সেবাটি চালু করে সাধারণ মানুষের সরকারী সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হোক।