অনলাইন ডেস্ক:
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করে পুলিশের গুলিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খানের মৃত্যুর বিচারকাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সংগঠন রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া)। তাদের দাবি, তিন মাসের মধ্যে বিচারকাজ শেষ করে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহার মৃত্যুতে জড়িতদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। দাবি আদায় না হলে আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে সংগঠনটি।
বুধবার (৫ আগস্ট) বিকেলে রাওয়া হেলমেট হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তুলে ধরেন রাওয়া’র প্রেসিডেন্ট মেজর (অব.) খন্দকার নুরুল আফসার।
সংবাদ সম্মেলনে অবিলম্বে মেজর সিনহা হত্যা মামলার সব আসামিকে মামলার স্বার্থে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানোর দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি ওই ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার সাহাকে অবিলম্বে সাসপেন্ড করে অন্তরীণ রাখার দাবি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে মামলার সাক্ষী যারা আছে, তাদের পরিবারের নিরপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
রাওয়া’র প্রেসিডেন্ট মেজর (অব.) খন্দকার নুরুল আফসার বলেন, আমরা পুরো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচার চাই। তা না হলে আমরা আন্দোলনে যাব। আমাদের এরকম আন্দোলনের কোনো নজির নেই। কিন্তু সহকর্মীকে হত্যার বিচারের দাবিতে আমরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব। তবে আমাদের আন্দোলনও হবে সুশৃঙ্খল।
এ ঘটনার তদন্তে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নকে (র্যাব) নিয়োজিত করার দাবি জানিয়েছে রাওয়া। এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে খন্দকার নুরুল অফসার বলেন, পুলিশ ও সিআইডি যেভাবে তদন্ত করে, সেটা তো করবেন। আমরা চাই, র্যাবও এর তদন্ত করুক। সবগুলো তদন্ত মিলিয়ে নিরপেক্ষ ও প্রকৃত প্রতিবেদন বেরিয়ে আসুক।
গত শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়ায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে মারা যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ খান। এ ঘটনা তদন্ত করতে প্রথমে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. শাজাহান আলিকে আহ্বায়ক করে গত ১ আগস্ট তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পরে একই দিন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সদস্য রেখে যুগ্মসচিব পদমর্যাদার চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এ ঘটনায় আজ বুধবার সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) নেতৃত্বে সেনা ও পুলিশ সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কক্সবাজার পরিদর্শন করেছেন। তারা সেখানকার সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরে সেনাপ্রধান ও আইজিপি এক যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে অংশ নেন।
যৌথ ব্রিফিংয়ে তারা বলেন, পুলিশের গুলিতে মেজর সিনহার মৃত্যুর ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন বলে মনে করছে দুই বাহিনী। এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জয়েন্ট এনকোয়ারি টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির ওপর সেনাবাহিনী ও পুলিশের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। সূত্র: সারাবাংলা।